পাকিস্তানে সহিংসতা ও বিচ্ছিন্নতার দৃশ্যপট

দি টাইমস, ১৫ জানুয়ারি, ১৯৭১

পিটার হ্যাজেলহার্স্ট

অনুবাদ:
ফাহমিদুল হক

”পাকিস্তানের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে আজ দেশটি সবচাইতে বিপজ্জনক ও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি”

১২০০ মাইলের ভারতীয় ভূখণ্ড দ্বারা ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন ও কিন্তু ইসলামী ঐক্যের মাধ্যমে যুক্ত পশ্চিম পাঞ্জাব ও পূর্ব বাংলার ভূখণ্ডদ্বয় ২৩ বছর পূর্বে একটি একক পাকিস্তান রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। দু-অংশের স্পর্শকাতর সম্পর্ক গত দু-দশকে উন্নতির চাইতে অবনতিই বেশি হয়েছে। পাকিস্তানের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে আজ দেশটি সবচাইতে বিপজ্জনক ও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। কারণ দেশটির দু-প্রদেশের নবনির্বাচিত নেতাদ্বয় পরস্পরের কাছে গ্রহণযোগ্য সংবিধানের রূপরেখা প্রণয়ণের জন্য মিলিত হচ্ছেন।

পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ ভাগ্য নির্ভর করছে তিনজন ব্যক্তির ওপরে: পূর্ব পাকিস্তানের অনলবর্ষী জাতীয়তাবাদী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান; প্রখ্যাত আইনজীবী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রি জুলফিকার আলি ভুট্টো, যিনি পশ্চিম পাকিস্তানের মুকুটহীন সম্রাট; এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, যাকে সংবিধান প্রণয়ণের কাজটি সারতে হবে। ভুট্টো এবং মুজিব উভয় নেতাই ১৩ কোটি পাকিস্তানীকে নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন যে সংবিধান প্রণয়ণের ব্যাপারে তারা একটি আপস-মীমাংসায় পৌঁছবেন, কিন্তু সংবিধানের মৌলিক কাঠামো নিয়ে তারা পরস্পর-বিরোধী অবস্থাই গ্রহণ করেছেন। সত্যিকার অর্থে উভয় নেতাই মনে করেন আপস করলে করতে হবে উনাকে এবং তার নিজের প্রত্যাশামতো সংবিধান প্রণীত হবে। শেখ মুজিব এমন একটি সংবিধান চান যার কারণে পাকিস্তান শিথিল ফেডারেশনের পাঁচটি রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যাবে এবং প্রাদেশিক সরকারগুলো এমন স্বায়ত্তশাসন ভোগ করবে যার মাত্র স্বাধীনতার চেয়ে সামান্য কম। যদি শেখের মতো করে সব কিছু হয় তবে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও মুদ্রা-ব্যবস্থা ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে আর কিছুই থাকবে না।

অন্যদিকে মি. ভুট্টো কার্যকর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে যার হাতে অর্থনৈতিক বিষয়াবলী ও রাজস্বসংক্রান্ত সবকিছুসহ প্রধান সবকিছুই থাকবে। দুই নেতাকে অনেক কিছুতেই একমত হতে হবে, কিন্তু সংবিধান প্রণয়ণ করতে চাইলে দুটি বিষয়ে একমত হতে হবে: বৈদেশিক বাণিজ্য ও রাজস্ব কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে না প্রাদেশিক সরকারের হাতে? এই দুই বিষয়ে যদি দুই নেতার আপসের কোনো সুযোগ থাকে তবে সেটা ছোটই; দুই ইস্যুর পেছনেই রয়েছে ইন্দো-পাকিস্তান সম্পর্ক ও কাশ্মির-প্রসঙ্গে উভয় নেতার আবেগগত ও পরস্পরবিরোধী অবস্থান। এছাড়া, উভয় নেতাই জানেন যে রাজস্ব অথবা বৈদেশিক বাণিজ্যে যদি তারা বড়ো ছাড় দেন তবে নিজ নিজ রাজনৈতিক ক্ষেত্রও ত্যাগ করতে হবে।

এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে ৩১০,০০০ বর্গমাইল এলাকার ৫৭ মিলিয়ন মানুষের পশ্চিম পাকিস্তান বিগত দু-দশকে নাটকীয়ভাবে উন্নতি করেছে; কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া, ৫৫,০০০ বর্গমাইল এলাকার জলাবদ্ধ পূর্ব পাকিস্তানে ৭৩ মিলিয়ন মানুষ ঠাসাঠাসি করে বাস করে এবং পৃথিবীর অন্যতম পশ্চাদপদ ভূখণ্ড হিসেবে থেকে গিয়েছে। ভুল হোক আর সঠিক হোক, পূর্ব পাকিস্তানীরা বিশ্বাস করে পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন ঘটেছে পূর্ব পাকিস্তানের অর্থ ব্যয় করে। তার চাইতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো কাশ্মির নিয়ে ভারতের সঙ্গে সংঘাতের কারণে পশ্চিম পাকিস্তানে অনেক বেশি অর্থ ব্যয়িত হয়ে থাকে। শেখ ও তার সমর্থকরা মনে করেন কাশ্মিরিদের তাদের নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করার অধিকার আছে এবং পূর্ব বাংলা এবিষয়ে আবেগ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে খুবই দূরে অবস্থান করছে। তাই তারা পশ্চিম পাকিস্তানের উত্তর অংশে বিপুল পরিমাণে সেনামোতায়েনের জন্য প্রতিরা বাজেটের শতকরা ৫০ ভাগে কেন অবদান রেখে যাবে তার কেনো কারণ দেখে না (পাকিস্তানের বাজেটের প্রায় অর্ধেক প্রতিরা খাতে ব্যয়িত হয়)।

বৈদেশিক বাণিজ্যের কথাও বলতে হয়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য ১৯৬৫ সালের পর থেকে বন্ধ রয়েছে। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানকে চীন থেকে টনপ্রতি ১৭২ রুপি হারে কয়লা কিনতে হচ্ছে। একই পরিমাণের কয়লা ভারত থেকে কিনলে ৫০ রুপি খরচ হতো। শেখ মুজিব জাতীয় পরিষদে বসলে ৩১৩টি আসনের মধ্যে ১৬৭টিই সম্ভবত থাকবে তার এবং তার সংবিধানকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে পরিচালিত করতে পারবেন। বৈদেশিক বাণিজ্য ও রাজস্ব বিষয়ে তিনি নিজেকে প্রত্যাহার করবেন কিনা তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ রয়েছে। একজন দলীয় কর্মীর মতে: ‘মনে রাখবেন এই ভোট ছিল সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার জন্য ভোট। শেখ মুজিবই কেবল স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রুতির কারণে স্বাধীনতাকে আটকে রেখেছেন।’ শেখও একইভাবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: ‘ছয় দফা নিয়ে কোনো আপস নয়।’

কিন্তু ১,২০০ মাইলের ওপারে ভুট্টো বলছেন অন্য কথা: ‘ছয় দফার সবগুলো আমি গ্রহণ করতে পারি না। দেশটি দু-বছরও টিকবে না।’ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রি রাজস্ব ও বিশেষত বাণিজ্য প্রসঙ্গে আপস করবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। মি. ভুট্টো রাজনৈতিকভাবে বিখ্যাত হয়েছেন ভারতের বিরুদ্ধে হাজার বছরের যুদ্ধের প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করার মাধ্যমে। তাসখন্দ চুক্তির পর থেকে তিনিই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতির প্রবক্তা বলে স্বীকৃত। তিনি দৃঢ়ভাবে মনে করেন ভারত-পাকিস্তান-সম্পর্ক ততণ স্বাভাবিক হবে না যতণ না ভারত অন্যান্য প্রান্তিক প্রশ্ন আলোচনার পূর্বে কাশ্মির-বিতর্কের সমাধান করছে। তিনি যথার্থই বলেন, ছয় দফা কাশ্মির বিতর্ককে চিরকালের জন্য ভারতের পক্ষে নিয়ে যাবে। অন্যদিকে ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য-সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী এবং কাশ্মির ইস্যুর সমাধান ‘পর্যায়ক্রমে’ করতে চায়।

বেশিরভাগ পাঞ্জাবী মনে করে পূর্ব পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য পুনরায় শুরু করবে এবং বৈদেশিক বাণিজ্য যদি প্রদেশের হাতে যায় তবে ভুট্টোর বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের নীতিকেই মেনে নেওয়া হবে। মি. ভুট্টো জানিয়েছেন তিনি ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের বিষয়টি মেনে নেবেন যদি মুজিবুর রহমান কাশ্মির ইস্যুকে একটি জাতীয় ইস্যু হিসেবে মেনে নেন। কিন্তু ব্যাপারটা মুজিবের জন্য স্ববিরোধিতা হবে। কারণ ভুট্টোর কথা মেনে নিলে মুজিবকে পাঞ্জাবে বিপুল পরিমাণে সেনা মোতায়েনে রাজি হতে হবে এবং তার ছয় দফা কর্মসূচীর উদ্দেশ্য তাতে ব্যাহত হবে।

মি. ভুট্টো মনে করেন রাজস্বের বিষয়টি ততটা বড়ো হবে না যদি মুজিব সংবিধানে এরকম একটি ধারা যোগ করতে রাজি হন যা নিশ্চিত করবে যে কেন্দ্রীয় সরকার তার অর্থনৈতিক সমর্থনের জন্য প্রাদেশিক সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপরে নির্ভর করতে হবে না। মূলত পশ্চিমা প্রদেশ বিশেষত পাঞ্জাব শেখের রাজস্ব-ফর্মুলার বিরোধিতা করছে। তারা মনে করেন প্রদেশগুলো যদি প্রতিরা খাতে অবদান রাখতে অস্বীকৃতি জানায় তবে কাশ্মির ইস্যুটি মুলতবি রাখা হবে। মুজিবুর রহমানের ফর্মুলা যদি কেন্দ্রের থলেতে অর্থ যোগান না দেয়, তার তত্ত্বানুসারে প্রতিটি প্রদেশের অর্থ ভবিষ্যতে সৈন্যবল বাড়ানোর জন্য তার নিজ প্রদেশেই ব্যয়িত হবে।

এটা সমভাবে সন্দেহজনক যে মি. ভুট্টো এধরনের ফর্মুলা মেনে নিবেন কিনা। এটা অবশ্যই সত্যি যে পাঞ্জাবে তার শক্তিশালী রাজনৈতিক ভিত্তি গড়ে উঠেছে ভারতবিরোধিতার মাধ্যমে, তার সমাজতান্ত্রিক নীতির মাধ্যমে নয়। পশ্চিম পাকিস্তানের এই নতুন নেতা এসব ইস্যুর কোনোটির সঙ্গেই আপস করা কঠিন হবে। একজন কর্মী জানালেন, ‘আমরা পাঞ্জাবীরা কাশ্মির নিয়ে অনেক রক্ত দিয়েছি এবং মি. ভুট্টো যদি কাশ্মির নিয়ে ভারতের কাছে কোনো ছাড় দেন তবে তাকে প্রাণদণ্ড দেয়া হবে।’

পরের ধাক্কাটি হবে সংবিধান কি এককক্ষবিশিষ্ট, না দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। বিদ্যমান কাঠামো অনুসারে সংসদের আসনগুলো জনসংখ্যা অনুসারে প্রদেশগুলোর জন্য বরাদ্দ। এবং এজন্য বৃহৎ জনগোষ্ঠীর পূর্ব পাকিস্তান সংসদে এমনিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে থাকে। স্বভাবতই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সুবাদে পূর্ব পাকিস্তান সংসদে যে সুবিধা পেয়ে থাকে, সেকারণেই তারা এককবিশিষ্ট সংসদ চাইবে। আরেকটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখা দরকার, এরকম একটি ধারণা গড়ে উঠছে যে শেখ যদি আপসের জন্য প্রস্তুত না হয়ে থাকেন, তবে পশ্চিম পাকিস্তানীরা দরিদ্র পূর্ব পাকিস্তানীদের ছাড়াই ভালো থাকবে।

সবকিছু নির্ভর করছে এই দুই নেতা তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে রাজনৈতিক ঝুঁকি নিবেন কিনা এবং এইসব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আপস করবেন কিনা। আপাতত সেরকম কোনো সম্ভাবনা নেই। যদি তারা কোনো বোঝাপড়ায় আসতে ব্যর্থ হন তবে, ঘটনাপরম্পরা পর্যবেণ করে এরকম ধরে নেয়া যায় যে পাকিস্তান অবশ্যম্ভাবীরূপে বিচ্ছিন্নতার দিকে এগিয়ে যাবে। যদি পশ্চিমাংশ এবং পূর্বাংশ কোনোটিই ছাড় দিতে রাজি না হয়, এটা খুবই স্বাভাবিক যে উভয়াংশের বৃহত্তর মতৈক্যের ভিত্তিতে সংবিধান প্রণয়ন সম্ভব নয়। এর ফলে মি. ভুট্টোকে সাংবিধানিক সংসদে ‘বিরোধীদলীয় নেতা’ হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দুই প্রদেশের মধ্যে সরাসরি সংঘাতই দেখা দেবে এবং সম্পর্কের আরও অবনতি হবে বলে অনুমান করা যায়। ভুট্টো পশ্চিম পাকিস্তানের স্বার্থ তুলে ধরার মাধ্যমে আরও বড়ো নেতা হয়ে উঠতে পারেন, কিন্তু পূর্ব পাকিস্তান তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে সংসদের মাধ্যমে নিজেদের সংবিধান বের করে নিয়ে আসতে সম।

এবং এর ফল যা দাঁড়াবে তাতে দেশের পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না। বাঙালিরা স্বাভাবিক কারণেই বলবে যে সংবিধান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই রচিত হয়েছে এবং পাশ হয়েছে। পরিভাষাগত দিক থেকে তারা হয়তো ঠিকই বলবে, কিন্তু সংবিধানটি সত্যিকার অর্থে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। ভুট্টোর কথামতো এটা প্রেসিডেন্টকে একটি বেদনাদায়ক দ্বিধার মধ্যে ফেলে দেবে। প্রেসিডেন্টের জন্য এমন কোনো সংবিধান অনুমোদন করা সহজ হবে না যা একটি প্রদেশের পুরোটাই তা প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু মুজিবকৃত কোনো সংবিধান প্রেসিডেন্ট অনুমোদন না করলে তাতে মুজিবের কী প্রতিক্রিয়া হবে তা সহজেই অনুমেয়। বাঙালিরা যুক্তি দেবে যে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত আইনসভা কর্তৃক প্রণীত কোনো সংবিধান পশ্চিম প্রদেশ প্রতিহত করেছে। এই পরিস্থিতিতে মুজিবের কর্মীরা মনে করেন পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে সকল প্রকার আপসপ্রচেষ্টা বাতিল করা ছাড়া শেখের আর কোনো বিকল্প নেই। তারা নতুন একটি নির্বাচনে অংশ না নিতেও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

আওয়ামী লীগের একজন কর্মী জানালেন, ‘আরেকটি নির্বাচনের কী মানে? মনে রাখবেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে স্বাধীনতার পে গণরায় দেয়া হয়েছে। আমরা যদি আমাদের স্বায়ত্তশাসন পাই তবে শেখ সাহেব স্বাধীনতা নাও চাইতে পারেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট যদি সংবিধানে সই করতে না চান তবে শেখকে পরের প্লেনেই ঢাকা ফিরে আসতে হবে এবং ফিরে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে হবে।’ তিনি জোরালোভাবেই কথাগুলো বললেন। বামপন্থী থেকে ডানপন্থী, কৃষক থেকে বুদ্ধিজীবী — পূর্ব পাকিস্তানের সবারই সার্বজনীন মতামত হলো এই। এই অবস্থায় দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা নির্ভর করছে সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া কী হয় তার ওপরে। ব্যাপারটি অদৃশ্যমান ও পূর্বানুমানভিত্তিক, কিন্তু এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে সেনাবাহিনী যদি চায় তবে এই পরিস্থিতিতে শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করতে পারে। এর মানে হলো ৭৩ মিলিয়ন বাঙালিকেই গ্রেফতার করা, এবং এর ফলে পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়া দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতায় নিমজ্জিত হবে।