Category Archives: Women in 1971

নারী মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন হয়নি

যুগান্তর, আগস্ট ২৫, ২০০৮

– ফারহানা রেজা

দেখতে দেখতে এক এক করে সাঁইত্রিশটি বছর পেরিয়ে গেল। প্রতি বছর স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নাম স্মরণ করি আমরা। একটি বিশেষ দিবস উদযাপনের অনুষঙ্গ হিসেবেই মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে স্মৃতিচারণই হয়ে ওঠে মুখ্য বিষয়। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে আমরা যারা পত্রপত্রিকায় টিভি ক্যামেরায় নিজের চেহারা দেখানোর প্রতিযোগিতায় নামি তারা কি কখনও ভেবে দেখেছি সাঁইত্রিশ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস পূর্ণতা পায়নি! এ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস রচিত হয়েছে। কিন্তু সে ইতিহাসে নারী মুক্তিযোদ্ধা ও এ দেশের নারী সমাজের অনবদ্য অবদানের কথা নেই। সরকারি উদ্যোগে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের ১৬ খণ্ড গ্রন্থেও নারী মুক্তিযোদ্ধাদের কোন তথ্য নেই। সেখানেও নারীর ভূমিকা চিত্রিত হয়েছে শুধু নির্যাতিতা হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নারীর ভূমিকা সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে সহযোগী হিসেবে কোথাও তারা মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাইয়েছে, অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে, আশ্রয় দিয়েছে, তথ্য সংগ্রহ করে দিয়েছে এর বেশি কিছু নয়। এ দেশের নারী মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার ইতিহাসে যেমন উপেক্ষিত, রাষ্ট্রীয় এবং সমাজ জীবনেও তাদের কেউ যথাযথ সম্মান দেয়নি। শুধু মুক্তিযুদ্ধই নয়, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে ছিল নারীর সরব উপস্থিতি ও সাহসী পদচারণা। অথচ ইতিহাসে নারীর সেই অবদানের স্বীকৃতি দিতে আমরা ক্ষমাহীন কার্পণ্য করেছি।

বলা হয়ে থাকে, মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের ৩০ লাখ মানুষের গণহত্যার শিকার হয়, যার অন্তত ২০ শতাংশ নারী। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সরকারি নথিপত্রে এর কোন তথ্য প্রমাণ নেই। তৎকালীন সরকারের হিসাব মতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে দুই লাখ মা-বোন নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু মাঠভিত্তিক গবেষণা চালাতে গিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের গবেষণা কর্মীদের মনে নিশ্চিত ধারণা জন্মেছে মুক্তিযুদ্ধকালে নির্যাতিত নারীর সংখ্যা যা এতদিন বলা হয়ে আসছে, আসলে তা এর চেয়েও অনেক বেশি। তবে এতদিন পর তথ্য-প্রমাণ দিয়ে হয়তো এসব প্রমাণ করার সুযোগ কম। তাছাড়া নির্যাতিতরা সামাজিক সম্মান ও নিরাপত্তার কারণেই চান না এতদিন পর এসব নিয়ে আর ঘাঁটাঘাঁটি হোক। এসব কারণেই অনেক নির্যাতিত নারী তাদের ওপর নির্যাতনের লোমহর্ষক কাহিনী গবেষণা কর্মীদের কাছে মুখে মুখে বললেও তা টেপরেকর্ডারে রেকর্ড করতে বা লিপিবদ্ধ করতে দিতে চাননি। তাদের অনেকেই এক্ষেত্রে অনুযোগের সুরে একটা কথাই বলে থাকেন, ‘এতদিন পর্যন্ত যেহেতু আমাদের কোন মূল্যায়ন হয়নি এখন আর এসব নিয়ে গবেষণা করে কি হবে’? তবে দারিদ্র্যের কষাঘাতে বিপর্যস্ত অনেক নির্যাতিত নারীই এখন আর নিজেদের লজ্জা-গ্লানি ঢেকে রাখতে চান না, তাদের বক্তব্য ‘জীবনই যেখানে চলছে না সেখানে এত লজ্জা-শরম রেখে আর লাভ কি?’ মুখ বুজে থাকার জন্যই তাদের স্বীকৃতি মেলেনি, তারা রাষ্ট্রীয় কোন সাহায্য-সহযোগিতা পাননি। কেউ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। এমন অভিমতও অনেকের।
একাত্তরে দেশের তৃণমূলের নারীরা যেমন পাক বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তেমনি শহরের মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের নারীদের ওপরও নির্যাতন কম হয়নি। গ্রামের ঘটনাগুলো প্রচার পেয়েছে বেশি আর শহরের ঘটনাগুলো সামাজিক অবস্থানগত কারণেই ধামাচাপা পড়ে গেছে। ইতিহাস বলে শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারাবিশ্বেই যুদ্ধে নারী ও শিশুরাই বেশি ভিক্টিমাইজ হয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের কতজন নারী নির্যাতিত হয়েছিল এর সঠিক তথ্য দেশের কোথাও নেই। আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হয়েছে, সেখানেও নারী মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিত নারীদের কোন তথ্য-উপাত্ত নেই। শুধু কি নির্যাতিত নারীর পরিসংখ্যান? বাংলাদেশে পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা হয়েছে কয়েকবার, কিন্তু নারী মুক্তিযোদ্ধাদের কোন পূর্ণাঙ্গ তালিকা এ পর্যন্ত করা হয়নি। নারী মুক্তিযোদ্ধারা কতটা অবহেলিত তার প্রমাণ হচ্ছে অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে খেতাবপ্রাপ্ত মাত্র দু’জন নারী মুক্তিযোদ্ধা। তাদের একজন (তারামন বিবি) তার খেতাব প্রাপ্তির কথা জেনেছেন প্রায় ৩০ বছর পর। অথচ স্বাধীনতা অর্জনে দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ ও আমাদের নারী সমাজেরও ছিল বিশাল অবদান।

যুদ্ধের ভয়াবহতা মানুষ দেখেছে, শুনেছে। কিন্তু যুদ্ধকালে নারীদের ওপর যে নির্মম নির্যাতন হয়েছে তার ক্ষত নিয়ে এখনও অনেক নারী বেঁচে আছেন। তাদের কষ্ট বেদনার ভার কেউ নেয়নি। কেউ তাদের আশ্বাসে-বিশ্বাসে কাছে টেনে নেয়নি।

পেশাগত কারণেই আমি বিভিন্ন জেলার এমন বেশ ক’জন নির্যাতিত নারীর মুখোমুখি হয়ে সরাসরি তাদের মুখ থেকে সেই ভয়াবহতার কথা শুনেছি। গাজীপুরের বীরাঙ্গনা মমতাজ, মুক্তিযুদ্ধ যার জীবনটাকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। যুদ্ধকালে গ্যাং রেপের শিকার মমতাজের যৌনিপথ আর পায়ুপথ এক হয়ে গেছে। সাঁইত্রিশ বছর ধরে পেটে পাইপ বসিয়ে তাকে প্রাকৃতিক কর্মকাণ্ড সারতে হচ্ছে। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে করাতে তার স্বামী সচ্ছল কৃষক থেকে এখন শুধু ভূমিহীনই নয়, ভিটেবাড়িও হারাতে হয়েছে তাকে। অথচ সুচিকিৎসা পেলে মমতাজ সুস্থ হয়ে উঠতে পারতেন। কেউ তার পাশে দাঁড়ায়নি। জীবনযুদ্ধে বিপর্যস্ত মমতাজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমার জীবন থেকে সব কেড়ে নিয়েছে। যুদ্ধে এত মানুষের মরণ হল, কিন্তু আমার মরণ হল না কেন? চৌদ্দগ্রামের মানিকের বউ যুবতী খঞ্জনীকে এলাকার মানুষের বাড়িঘর ও জীবন বাঁচাতে স্থানীয় মোড়লরা পাক বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল। স্বাধীনতাবিরোধী সেসব মোড়ল সমাজে আজও মাথা উঁচু করে বিচরণ করছে। অথচ যে নারী তার সর্বস্ব বিলিয়ে গোটা গ্রামের মানুষের জীবন রক্ষা করল, স্বাধীন দেশে সে গ্রামেই স্থান হয়নি খঞ্জনীর। সব হারিয়ে পাগলিনী খঞ্জনী এখন পাশের গ্রামে এক সচ্ছল পরিবারের গোয়াল ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। মুক্তিযুদ্ধ তার সংসার, সম্মান, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সব কেড়ে নিয়েছে। এখন কেউ তার পাশে নেই। বিপন্ন বিস্ময় নিয়ে নির্বাক খঞ্জনী এখনও বেঁচে আছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শেষ দেখতে! গৌরনদীর নূরজাহান ওরফে নুরীর বৃদ্ধ পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাক বাহিনী। পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে যুবতী নূরী আত্মহননের হুমকি দিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দলে যোগ দেন। ইনফরমার হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাক শিবিরের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। পাক বাহিনীর অনেক অপারেশনের খবর নূরী এনে দিতেন মুক্তিযোদ্ধাদের। ১৯৭১ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের শিকারপুর পাক বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন নূরী। পালানোর চেষ্টাকালে তার পায়ে গুলি লাগে। তারপর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নূরী গৌরনদী কলেজে পাক ক্যাম্পে বন্দি ছিলেন। গৌরনদী থেকে পাক বাহিনী পালিয়ে যাওয়ার পর নূরীসহ আরও চৌদ্দজন নারীকে পাক বাহিনীর ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করে মুক্তিযোদ্ধারা। ক্যাম্পে আটক অবস্থায় আহত নূরীর ওপর চলে সীমাহীন যৌন নির্যাতন। সেই নূরী স্বাধীন দেশে নিজ পরিবারে ঠাঁই না পেয়ে ঢাকার এক বস্তিতে এসে ওঠেন। বাসা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ আর দাইয়ের কাজ করে জীবন কাটছে তার। কুষ্টিয়ার তিন বীরাঙ্গনা নারী দুলজান নেসা, এলেজান নেসা ও মাসুদা খানমের কথা বলা যায়। ২০০৬ সালে নারীকণ্ঠ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমরা তাদের ঢাকায় এনে সংবর্ধনা দিয়েছিলাম। সংবর্ধনার জবাবে প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে এই তিন নারী অভিন্ন কণ্ঠেই উচ্চারণ করেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ আর দ্যাশ আমাদের অপমান, অবজ্ঞা আর গঞ্জনা ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি’। পেশাগত দায়িত্বের সুবাদেই এমন শতাধিক নারী মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা নারীকে জানি যারা অভাব-অনটনে বিপর্যস্ত। স্বাধীন দেশ হয়েছে, নতুন পতাকা হয়েছে। কিন্তু এসব নারী মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা নারীদের ভাগ্যে উপেক্ষা ছাড়া আর কিছুই জোটেনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে কয়েক বছর হল সেখানেও নারী মুক্তিযোদ্ধা ও একাত্তরের নির্যাতিত নারীদের কোন তথ্য-উপাত্ত নেই। এই মন্ত্রণালয়ের হর্তাকর্তারা কি বলতে পারবেন এদেশে কতজন নারী মুক্তিযোদ্ধা আছেন? তারা কোথায় কেমন আছেন? জানি, এসবের উত্তর তারা দিতে পারবে না। এমন বিচিত্র আমাদের এই দেশ যেখানে যুদ্ধাপরাধীরা দাবড়ে বেড়ায় আর মুক্তিযোদ্ধারা ভিক্ষা করে, রিকশা চালায়, দিনমজুরি করে সংসার চালায়, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে বঙ্গভবনে এঁটো কুড়াতে হয়, খঞ্জনীদের নিজ গ্রাম ছেড়ে অন্য গ্রামের গোয়াল ঘরে মাথা গুঁজতে হয়। একটি পৃথক মন্ত্রণালয় থাকার পরও এভাবে আর কতকাল এ দেশের মুক্তিযোদ্ধা, নারী মুক্তিযোদ্ধা ও বীর কন্যারা উপেক্ষিত থাকবে?

– ফারহানা রেজা : মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও নির্বাহী পরিচালক, নারীকণ্ঠ ফাউন্ডেশন

Skewing the history of rape in 1971 A prescription for reconciliation?

Nayanika Mookherjee runs a critical eye over Sarmila Bose’s controversial analysis of the violence committed during the Liberation War:

This is a discussion of Sarmila Bose’s article: “Anatomy of Violence: Analysis of Civil War in East Pakistan in 1971” (EPW, Oct 8, 2005). A version of this paper was first presented by Dr Bose at a two-day conference, on June 28-29, 2005, organized by the historian branch of the United States Department of State titled “South Asia in Crisis: United States Policy, 1961-1972.” This was arranged to mark the release of declassified US records relating to the theme of the conference.

As an Indian working in Bangladesh for nearly a decade on the public memories of sexual violence during the Bangladesh war of 1971, I was particularly struck by the author’s use of the phrase “civil war” to refer to the Bangladesh war. Most Bangladeshis denounce the use of the term “civil war” to refer to the Bangladesh war as it deflects attention from its genocidal connotations.Instead, they semantically and politically distinguish the Bangladesh war as either muktijuddho (liberation war) or shadhinotar juddho(independence war).

It is also important to note that occurring at the juncture of Cold War politics, with the United States government supporting Pakistan during 1971, and the Indian government assisting the East Pakistani guerrilla fighters, the genocidal connotations of the Bangladesh war remains unacknowledged, till date. The use of the phrase “civil war” in the title of the article suggests that the author was in agreement with the Pakistani and US government’s version of events of 1971. Yet the paper was claiming to provide “an impartial account.” I was intrigued.

Through what Bose refers to as “case studies,” she tries to highlight how violence was inflicted by both sides — the Pakistani army and the East Pakistani liberation fighters — during the 1971 war. She also refers to the lack of incidents of rape during the Bangladesh war in her “cases” in a small paragraph found at the end of her long article. She suggests a prescription for reconciliation through an acknowledgement of violence inflicted by all parties involved.

Soon after the Washington conference, the points made in her paper were promptly picked up by the Pakistani newspapers: The Daily Times (Hasan, June 30,2005; Editorial, July 2, 2005) and Dawn (Iqbal, July 7, 2005). Both refer to the violence inflicted by both sides, and the absence of rape during the Bangladesh war. The entry on Sarmila Bose in Wikipedia, the popular internet encyclopedia, reiterates only the brief paragraph on rape.

In a response to Uttorshuri, a Bangladeshi web mail group, on July 2, 2005, Bose said: “The heading given to the Daily Times, Pakistan, report is incorrect and not the finding of my study.” Her work unleashed a barrage of criticism in Bangladesh and her research methods have been attacked as being shoddy and biased.

Collingwood (1945) has shown that historical “facts” are the reconstitution of the past in the historian’s minds, involving the selection and interpretation of the past, as history is the choice of a particular expository style that is itself determined historically.

My discussion of Bose’s article here, nearly ten months after the publication of her article in EPW, is an attempt to show the various responses to Bose’s work, her response to these feedbacks and to highlight Bose’s expository style which is appropriated by varied configurations.

In this discussion, I critically address Bose’s exposition about: a) violence being inflicted on both sides, b) the lack of instances of rape in her “cases,” and c) interrogate her formulation of reconciliation and highlight its implications on sub-continental politics.

Violence inflicted on both sides
All parties involved are shown to “commit acts of brutality outside accepted norms of warfare, and all had their share of humanity …with Bengalis, Biharis and West Pakistanis helping one another in the midst of mayhem,” in Bose’s article. This is evidenced by the Pakistan army targeting adult males while sparing women and children. However, local Bengali “loyalists”/collaborators, and not the Pakistani army, are involved in inflicting violence on their fellow Bengalis and the killing of intellectuals.

According to these accounts the Pakistani army did not inflict all the violence. This decontextualized account of Bengali collaborators does not recognize the triggers and advantages that the presence of, and collaboration with, the Pakistani army created. It misses the analytical point that in all wars local collaborators become the indispensable foot-soldiers of the institutionalized military paraphernalia.

The Pakistani army is portrayed as kind, but violent when provoked, whereas the Bengalis inflict violence “for unfathomable reasons.” The situation in Bangladesh during 1971 is described through phrases like: “widespread lawlessness during March,” “encouraged to break the law,” “urban terrorism,” and “rebels.”

The treatment of the Pakistani army namely: “refusal of Bengalis to sell them food and fuel, being jeered and spat at … and the widespread disregard of curfew orders, murder of army personnel,” are not considered to be examples of resistance and opposition, but are cited as instances of the suffering of the Pakistani army and an exhibition of “extraordinary restraint of the army under provocation.”

The “rule of law” remains with the Pakistani army as they “secure” and “gain control” over territories. Army reaction is cited as “overwhelming” while the rebels are “disorganised and amateurish” who for “unfathomable reasons … take pot-shots at the advancing units in the bazaar which triggered an overwhelming reaction from the army.”

There is no commentary on the contestations that exist in Bangladesh in relation to the varied national narratives of 1971. As a result, the observation by the former liberation fighter Iqbal: “This must be the only country in the world where there are two views on the independence of the country,” remains unanalysed.

As in-depth reading of various critical literature on war and violence (Butalia 1998; Das 1995; Nordstrom 2004) would show liberation and independence of countries are not homogenous narratives, and contain within their folds multiple contesting interrogations of wars through which countries become free. This is more so the case in Bangladesh (Hitchens 2001), given its fractured histories of partitions and independence.

Also, Nixon’s reference to Bangladesh as the “place” remains uncommented upon. This article, which was first presented in a conference hosted by the US department of State, is particularly conspicuous in the absence of any critical examination of the US support for Pakistan’s role in the Bangladesh war of 1971, in the context of Cold War calculations.

The article is helpful in addressing the ethnicization of the army as “Punjabis,” and in bringing out some of the nuances of the Pakistani army. That wars and conflicts are rife with instances of violence, kindness, cowardice, complicity, contradictions by the same individuals is not anything new and has been highlighted by various feminists, critical researchers and filmmakers within Bangladesh (Akhtar et al. 2001; Choudhury 2001; Kabir 2003; Masud 1999, 2000).

They show the multiple, contradictory, subjectivities of the Bangladesh war experience, and the violence inflicted upon the poor, women, Biharis, and adivasis. In my own work, I have encountered similar complicities and contradictions. Rather than citing these experiences as ahistorical and apolitical “facts,” they need to be located at the crossroads of local and national politics and histories.

The earlier mentioned formulation by Collingwood is significant here. In her other writings, Bose has attempted to go beyond Indo-Pakistani enmities. She highlights the various symbolic roles of a flag, and the possible repercussions of possessing a Pakistani flag in India (Bose 2003). In the Christian Science Monitor she argues (Bose and Milam 2005) in support of the sale of F-16s to Pakistan as a stabilizing factor within world and sub-continental geo-politics. In the EPW article, the nature of her expository style and presentation of “facts” make her “cases” representative of war-time experiences of all in Bangladesh.

Skewing the history of rape
The small paragraph, located in the last page of the article, relating to the absence of rape in the “cases” has been highlighted as evidence that the Pakistani army did not rape. In her response to Uttorshuri, Bose says: “The issue of rape amounted to about 100 words out of a nearly 6,500 word paper on the subject of patterns of violence in 1971.” An issue as contentious as the “patterns” of violence of rape can be claimed to be absent, through only 100 words! Bose explicates: “As I pointed out in the discussion that followed, there is evidence elsewhere that rape certainly occurred in 1971. But it seems — from this study and other works — that it may not have occurred in all the instances it is alleged to have occurred.”

Bose’s comment that rapes did occur elsewhere in 1971 is absent in her EPW article. In it she emphasizes the need to distinguish between the instances where rape occurred and where it did not. Throughout, it shows that the Bengalis raped Biharis while the Pakistani army did not rape anyone during the war. Also, it is not very clear which “cases” are being referred to in the statement: the rapes “may not have occurred in all the instances they are alleged to have occurred.” Rather than this generalized statement, it would have been more transparent scholarship to cite the specific “cases” where the rapes were alleged which the research instead finds, is absent.

Bose shows, in the case of “mutinies” by “rebels,” that “there was assault and abduction” of women. The Pakistani army however, “always” targeted adult males while sparing women and children. The Hamdoodur Rahman Commission (2000) established by the Pakistani government, while referring to the attack and rape of pro-Pakistani elements by Bengalis, also cites various instances of rape.

Eyewitness accounts can also be found in the eighth volume of the Dolil (Rahman 1982-85: 106, 192, 385). There is literature from the 1970s (Greer 1972; Brownmiller 1975) and recent scholarship and films based on oral history from within Bangladesh (Akhtar 2001; Choudhury 2001; Guhathakurta 1996; Ibrahim 1994, 1995; Kabir 2003; Masud 2000) which shows that the Pakistani army committed rapes and highlights the complexities of these violent encounters. Bose makes no reference to any of these documentations.

Recently, in Bangladesh, various women from different socio-economic backgrounds have narrated their violent experiences of rape by the Pakistani army and local collaborators. The well-known sculptor, Ferdousy Priyobhashini, has been vocal about her war-time experiences and the role of Pakistani army and Bengalis. My own work with various women who were raped during the war shows the contradictions of the war-time experiences while highlighting their violent encounters. All these documentations emerge as important counter-narratives to the various prevalent Bangladeshi nationalist accounts of the war.

Emphasizing these war-time contradictions is not tantamount to a denial of the incidents of rape perpetrated by Pakistani army and their local collaborators.

A prescription for reconciliation?
Reconciliation, according to Bose, is possible through an acknowledgement of violence inflicted by all parties involved. However, for her, this is hinged on an unequal reliance on literally accepting the various viewpoints of the Pakistani army and administration, drawn from secondary sources (only one interview with General Niazi is briefly quoted).

While referring to the innumerable publications on 1971 as a “cottage industry,” Bose seems to negate the emotive expressions of her informants as “the cultivation of an unhealthy victim culture” and a “ghoulish competition with six million Jews in order to gain international attention.” This highlights a lack of empathy with her informants, and insensitivity to their comprehension of violence.

Primo Levi’s work on Auschwitz shows that individuals who have encountered and survived violence make various complicated, competitive and contradictory negotiations to inhabit their survival and “victimhood.” Here, Bangladeshi testimonials are ironically the means through which war-time narratives are negated.

The various individual accounts of violence, in turn, become muted with the prescription of “reconciliation.” Significantly, for many Bangladeshis, “reconciliation” has a jarring resonance, as it is perceived to be the objective of various war-time collaborators, who are currently rehabilitated in the Bangladeshi political landscape.

Seen only as a “place” (Nixon), a “basket case” (Kissinger), Bangladesh is stereotypically viewed internationally, and in South Asia, as a country ravaged only by poverty, floods, cyclones and, hence, in need of the saviour, interventionist, developmental paradigms.

Here, Bangladeshi histories and politics are again delegitimized as a result of sub-continental dynamics, as there is no engagement with the wider picture in Bangladesh.

The expositions in this article itself stand in the way of reconciliation between Bangladesh and Pakistan, and cannot provide a prescription to resolve these hostilities. War-time contradictions, complicities, nuances can be highlighted without negating the foundational violence of the history of rape of the Bangladesh war perpetrated by the Pakistani army and the local collaborators.

While the Bangladesh war might be a “civil war,” or Indo-Pakistan war for India and Pakistan, for most Bangladeshis it is the war of liberation and independence, even though that liberation might be interrogated in post-colonial Bangladesh. Only by recentring the issues which concern Bangladesh, along with highlighting the contradictions of wartime experiences, rather than proffering an argument which caters to Indo-Pakistan geo-political concerns, could one help the cause of reconciliation between Pakistan and Bangladesh.

This piece is adapted from “Bangladesh War of 1971: A Prescription for Reconciliation?” EPW, Vol. 41 No 36: 3901-3903. We have reprinted it here by special arrangement with EPW due to the intense interest within Bangladesh generated by the original Bose article that Dr Mookherjee discusses.

Dr Nayanika Mookherjee is a Lecturer in the Sociology Department in Lancaster University and a Research Fellow for the Society of South Asian Studies, British Academy.

References
Akhtar, Shaheen, Suraiya Begum, Hameeda Hossain, Sultana Kamal, and Meghna Guhathakurta, eds. 2001. Narir Ekattor O Juddhoporoborti Koththo Kahini (Oral History Accounts of Women’s Experiences During 1971 and After the War). Dhaka: Ain-O-Shalish-Kendro (ASK).

Bose, Sarmila. 2005. “Anatomy of Violence: Analysis of Civil War in East Pakistan in 1971,” Economic and Political Weekly, October 8, 2005.http://www.epw.org.in/showArticles.p…&filetype=html

Bose, Sarmila and WB Milam. 2005. “The Right Stuff: F-16s to Pakistan is Wise Decision.” Christian Science Monitor, April 11, 2005. http://www.csmonitor.com/2005/0411/p09s02-coop.html

Bose, Sarmila. 2003. “What’s in a Flag?” The Daily Times (Pakistan), September 23, 2003. http://www.countercurrents.org/ipk-bose230903.htm

Brownmiller, Susan. 1975. Against Our Will: Men, Women and Rape, pp. 78-86. London: Secker & Warburg.

Butalia, Urvashi. 1998. The Other Side of Silence: Voices from the Partition of India. New Delhi: Viking Penguin India.

Collingwood, RG. 1945. The Idea of History. Oxford: Clarendon Press.

Das, Veena. 1995. Critical Events, pp. 55-83. Delhi: Oxford University Press.

Greer, Germaine. 1972. “The Rape of the Bengali Women.” Sunday Times, April 9, 1972.

Hamdoodur Rahman Commission of Enquiry. 1971. Published in August 2000. Pakistan Government.

Guhathakurta, Meghna. 1996. “Dhorshon Ekti Juddhaporadh” (Rape is a War Crime). Dhaka: Bulletin of Ain-O-Shalish Kendra (ASK), February 6-8.

Hasan, K. 2005. “Army Not Involved in 1971 Rapes.” June 30, 2005. http://www.dailytimes.com.pk/default…0-6-2005_pg1_2

Hitchens, Christopher. 2001. The Trial of Henry Kissinger. London: Verso.

Ibrahim, Nilima. 1994-5. Ami Birangona Bolchi (This is the “War-Heroine” Speaking), 2 Volumes. Dhaka: Jagriti.

Iqbal, Anwar. 2005. “Sheikh Mujib Wanted a Confederation: US Papers.” July 7, 2005. http://www.dawn.com/2005/07/07/nat3.htm

Levi, Primo. 1996. Survival in Auschwitz: The Nazi Assault on Humanity. Translated from the Italian by Stuart Wolf. New York: Touchstone Books.

Mookherjee, Nayanika. (forthcoming). Specters and Utopias: Sexual Violence, Public Memories and the Bangladesh War of 1971. Durham: Duke University Press.

Mookherjee, Nayanika. 2006. “Remembering to Forget: Public Secrecy and Memory of Sexual Violence in Bangladesh.” Journal of Royal Anthropological Institute (JRAI), 12 (2), June 2006: pp. 433-450.

Mookherjee, Nayanika. 2004. “My Man (Honour) is Lost but I Still Gave my Iman (Principle): Sexual Violence and Articulations of Masculinity.” South Asian Masculinities. R Chopra, C Osella and F Osella, eds. New Delhi: Kali for Women: pp. 131-159.

Nordstrom, Carolyn. 2004. Shadows of War: Violence, Power, and International Profiteering in the Twenty-First Century. California Series in Public Anthropology, University of California Press.

Rahman, Hasan H, ed. (1982-1985). Bangladesher Shadhinota Juddho Dolilpotro (Documents of the Bangladesh Independence War). Sixteen Volumes. Dhaka: People’s Republic of Bangladesh, Information Ministry.

Films

Choudhury, Afsan. 2001. Tahader Juddho (Their War).

Kabir, Yasmin. 2003. Shadhinota (A Certain Freedom).

Masud, Tareque and Catherine Masud. 1999. Muktir Katha. (Words of Freedom). Dhaka: Audiovision.

Masud, Tareque and Catherine Masud. 2000. Women and War. Dhaka: Ain-O-Shalish-Kendra (ASK) and Audiovision.

Web-sites
Discussion Forum: Story of Pakistan http://www.storyofpakistan.com/discf……d=11&page=1

Drishtipat: http://drishtipat.org/sarmila/sarmila.htm

IndPride: Sarmila Bose: In Praise of Pakistan http://www.indpride.com/mediamonitor.html

The Daily Times (Pakistan), July 2, 2005. http://www.dailytimes.com.pk/default.asp?page=story_2-7 2005_pg3_1

US Department of State South Asia in Crisis: United States Policy, 1961-1972 June 28-29, 2005, Loy Henderson Auditorium, Tentative Program. http://www.state.gov/r/pa/ho/46059.htm

Uttorshuri: “Revisionist Historian on Rapes of 1971,” July 2, 2005.
http://groups.yahoo.com/group/uttorshuri/message/4090

Wikipedia: http://en.wikipedia.org/wiki/Sarmila_Bose

Credit: AK Zaman